হোমিওপ্যাথির উন্নয়নে আমার কিছু চিন্তা ভাবনা :-

-ডাঃ মুহাম্মাদ মহিব্বুর রহমান।
প্রথমেই আত্মম্বরিতা ত্যাগ করে করে সবাই এক কাতারে আসতে হবে।
HMB,DHMS এবং BHMS দের মধ্যে আন্তঃ কোন্দল, অহংকার দূর করতে হবে।
DHMS কোর্স চালু হয়েছিল HMB পাস করা শিক্ষকগণ দ্ধারা।
BHMS কোর্স চালু হয়েছিল DHMS পাস করা শিক্ষকগণ দ্ধারা।
DHMS চিকিৎসক দের মধ্যে যেমন সবাই ভাল মানের নয়,তেমনি সকল BHMS চিকিৎসক গনও মানসম্পন্ন নয়।
ভবিষ্যতে হোমিও MD কোর্স চালু হবে BHMS পাস শিক্ষকগন দ্বারা।
অতএব কাউকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সবার অবদান সমান।
পরস্পরের প্রতি সম্মান, আন্তরিকতা, ভালবাসা,মর্যাদাবোধ থাকতে হবে।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসক এর ভুল হলেও সম্মানের সাথে ধরিয়ে দিতে হবে, কারো ভুলের জন্য তার বিরুদ্ধে ট্রল করা ঠিক হবে না।
ছোট,বড়,সিনিয়র অথবা জুনিয়র,পাস করা কি ফেল করা, সার্টিফিকেট আছে কি নেই এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
যিনি জানেন তিনি শেখাবেন,যিনি জানেন না তিনি শিখবেন।
সবার জ্ঞান, বুদ্ধি, মেধা, দক্ষতা,যোগ্যতা, দূরদর্শিতা,পারদশীতা সমান নয়,তাই প্রত্যেকের অভিজ্ঞতা অন্যের সঙ্গে শেয়ারের ব্যাবস্থা রাখা অবশ্যই প্রয়োজন।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক গানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বদ অভ্যাস হলো নিজে চিকিৎসা করতে না পারলেও অন্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক এর নিকট রেফার করেন না,এ বদ অভ্যাস অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে।
পরামর্শ দেয়া এবং নেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে,এ ব্যাপারে কার্পন্য করা কোনো ভাবেই কাম্য নয়।
মানসম্পন্ন কলেজ, মানসম্পন্ন শিক্ষক, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি,হাতে কলমে শিক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে, শিক্ষার্থীদের ক্লাস ফাঁকি দেয়া চলবে না। সম্মানিত শিক্ষক গন পুর্ন প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে আসবেন, যথাসম্ভব সহজ ভাবে শিখাবেন যেন, শিক্ষার্থীরা মুখস্থ নয়,আত্মস্থ করতে পারে।
মান সম্পন্ন হাসপাতাল থাকতে হবে, অবশ্যই নামকা ওয়াস্তে নয়, রোগী ভর্তি থাকতে হবে, শিক্ষকগণ ছাত্র ছাত্রীদের সামনে রোগী দেখবেন,প্রশ্ন করবেন,ব্যাখ্যা করবেন, শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন, রোগী গনের সেবার জন্য নার্সের ব্যাবস্থা রাখতে হবে।
হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সকল ঔষধের সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে।
লাইব্রেরীতে সকল প্রয়োজনীয় বই থাকতে হবে।
প্রতিটি কলেজে,ক্লাশে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাবস্থা রাখতে হবে।
অবশ্যই উন্নত মানের গবেষণাগার গড়ে তুলতে হবে।
উচ্চ শিক্ষার পথ বন্ধ করা যাবে না,উচ্চ শিক্ষার পথ সহজ করতে হবে।
হোমিওপ্যাথি বিশ্ব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে,তার অধীনে দুটি হোমিওপ্যাথি ডিগ্ৰি কলেজ সহ অন্যান্য ডিপ্লোমা কলেজ গুলিকে এর অধীনে আনা যায় কি না,তা বিবেচনা করা যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উন্নত সিলেবাস তৈরি করে পাঠদানের ব্যাবস্থা করা উচিত।
নন্ সার্জিক্যাল বিষয় সমুহের উপর উচ্চ শিক্ষার দ্ধার উম্মোচন করতে হবে, যেমন আল্ট্রা সাউন্ড এন্ড ইমেজিং এর উপর উচ্চ ডিগ্ৰি লাভের সুযোগ অবারিত করতে হবে।
সার্জারিতে অতি পিছিয়ে পড়াকে যথাসম্ভব এগিয়ে নিতে হবে।
গবেষণাগারে প্র্যাকটিক্যালি গবেষণা করার সুযোগ থাকতে হবে।
ভালো মানের পত্রিকাতে সমসাময়িক বিশ্বের হোমিওপ্যাথির খোঁজখবর প্রকাশ করতে হবে, হোমিওপ্যাথিতে দেশে বিদেশে বাস্তব আরোগ্যের ঘটনা প্রকাশিত হলে, নতুন পুরাতন সকল চিকিৎসকের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
যেহেতু আমাদের বেশিরভাগ ভাগ ঔষধ গাছগাছালি হতে তৈরি,তাই একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন থাকা উচিত।
মান সম্পন্ন ঔষধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ভালো মানের ঔষধ তৈরির কারখানা স্থাপনের চেষ্টা করতে হবে।
যে সকল সম্মানিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক গন,এই হোমিওপ্যাথি দিয়ে গাড়ি, বাড়ি ও অনেক ধন সম্পদ অর্জন করেছেন, এখন সময় এসেছে আপনাদের হোমিওপ্যাথিকে কিছু দিয়ে সামান্য হলেও ঋণ পরিশোধ করা,তাই আপনারা এগিয়ে আসুন, হোমিওপ্যাথির উন্নয়নে সচেষ্ট হউন।
এ ব্যাপারে দেশীয় হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রস্ততকারি কোম্পানী সমুহ ও আমদানি কারক প্রতিস্টান সমূহ সহযোগিতা করতে পারেন।
মনে রাখবেন হোমিওপ্যাথির উন্নয়ন মানে দেশীয় ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও আমদানি কারক দের উন্নয়ন।
আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে আপাতত এই পরামর্শ দিলাম,আপনারা এর সঙ্গে আরও অনেক পরামর্শ যোগ করতে পারেন।
আমি শুধু সবার দৃষ্টি আকর্ষণ এর চেষ্টা করলাম।
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।