Staphysagria (স্ট্যাফিস্যাগ্রিয়া): ডা.এইচ.সি.এলেন

Staphysagria (স্ট্যাফিস্যাগ্রিয়া)
#নিজস্বকথাঃ
১। কামভাবের প্রাবল্য এবং তাহার কুফল।
২। অতিরিক্ত ক্রোধ এবং তাহার কুফল।
৩। সঙ্গম বা সহবাসজনিত মূত্রকষ্ট বা শ্বাসকষ্ট।
৪। চক্ষে অঞ্জনি ও দাঁতে পোকা। অস্ত্রপচারের কুফল।
#মূলকথাঃ
১। সর্বদা কাম বিষয়ক চিন্তা, অতিরিক্ত ইন্দ্রিয় পরিচালনা ও হস্তমৈথুনের ফলে অসুস্থতা।
২। উদাসীনতা ও সকল বিষয়ে তাচ্ছিল্য ভাব, মন বিষন্ন ও স্মৃতিশক্তি দুর্বল।
৩। কপালে একটা বল আটকে আছে এমন অনুভূতি, মাথা ঝাঁকালেও তা পরেনা।
৪। চোখের পাতার উপরে অঞ্জনি উঠে, শক্ত গুটিকার মত হয়।
৫। দাঁত কালো হয়ে যায় এবং ভেঙ্গে যায়, শিশুদের দাঁতের অসুস্থতা।
৬। সারাদিন নিদ্রালুতা কিন্তু সারারাত নিদ্রাহীনতা ও সমস্ত শরীরে ব্যথা।
৭। রাগ ও অপমানের কথা মনে চেপে রাখার ফলে অনিদ্রা।
৮। পেট ভরা থাকলেও ক্ষুধা অনুভূত হয়, পাকস্থলী যেন উদরে ঝুলছে এমন অনুভূতি।
#উপযোগিতাঃ
১। হস্তমৈথুন ও অতিরিক্ত যৌনাচারহেতু মানসিক বিশৃঙ্খলা, উদাসীন, অমনোযোগী, উৎসাহহীন ও স্মৃতিশক্তি দূর্বল হয়ে পড়ে (এনাকার্ডি, অরাম-মে, নেট-মি, এসি-ফস)।
২। সামান্যতম মানসিক আঘাতে, সামান্য ব্যাপারে অসহিষ্ণু ও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তুচ্ছ নির্দোষ কথাতেও অপমানিত বোধ করে (ইগ্নে)।
৩। নিজের কৃতকর্মের বা অন্যের কাজে রেগে যায়, মনে করে সবই অযথা, মূল্যহীন, নিরর্থক, ফল সম্বন্ধে চিন্তা করে মন ভেঙ্গে যায়। অহঙ্কার, ঈর্ষা বা মনে কষ্ট হয়ে অসুখ হলে উপযোগী।
৪। হস্তমৈথুন ও অতিরিক্ত ইন্দ্রিয়ের ব্যবহারে জৈবতরল নষ্ট হয়ে, মনে শোক-তাপ পেয়ে, মনে দারুণ আঘাত পেয়ে, অহেতুক অপমানিত হয়ে, ক্রোধ, বিরক্তি বা দীর্ঘদিনের অসন্তোষ জমা হয়ে (অরাম-মেট) তার কুফলে রোগ হলে উপযোগী।
৫। মেজাজ ভাল নয় এমন শিশু এটা-ওটার জন্য বায়না করে, দিলে পরে রাগের সাথে, বিরক্তি সাথে, ঠেলে সরিয়ে দেয় বা ছুড়ে ফেলে দেয় (ক্রিয়ো)।
৬। কখনো অপমানিত হযে আত্মসম্মানবোধের জন্য ঝগড়া না করতে পেরে, ঐ রাগ বা দুঃখ মনে চেপে রেখে বাড়ীতে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ে, কাঁপতে থাকে, ক্লান্ত ও অবসন্ন হয়ে পড়ে (নাক্সের বিপরিত)।
৭। কপালে যেন গোল একটা বলের মত কিছু এটে বসে আছে এমন অনুভূতি, মাথা নাড়লেও যেন ঐ বল নড়ে না বা পড়ে যায় না।
৮। তীক্ষ্ম ধারালো অস্ত্রে কেটে গেলে, অস্ত্র দ্বারা অপারেশনের পর হুল ফোটানো ব্যথা, ছুরি দেয়ে কেটে ফেলার মত তীক্ষ্ম বেদনা হলে উপযোগী।
৯। স্নায়ুবিক দৌর্বল্য- যেন অতিরিক্ত পরিশ্যম করে ক্লান্ত, অবসন্ন হয়ে পড়েছে।
১০। চোখের পাতায় বিশেষতঃ উপর পাতায় অঞ্জনী বা ছোট ছোট টিউমারের মত গুটি হয়। একটার পর একটা হতেই থাকে, শেষে স্থানটি শক্ত টিউমারের মত হয়ে থাকে (কোনি, থুজা)।
১১। দাঁতব্যথা: ঋতুস্রাবের সময় হয়। ভাল দাঁত ও ক্ষয়প্রাপ্ত দাঁত ব্যথা হয়, খাদ্যদ্রব্য বা পানীয়েল ছোঁয়ায় ব্যথা বেড়ে যায় কিন্তু কামড়ালে বা চিবালে ব্যথা হয় না। ঠান্ডা বাতাস মুখে টানলে ব্যথা বাড়ে, ঠান্ডা পানীয় ও খাওয়ার পরে দাঁত ব্যথা বেড়ে যায়।
১২। দাঁতগুলো কালো হয়ে যায়, কালো কালো লম্বা লম্বা দাগ পড়ে, দাঁত পরিষ্কার হতে চায় না, দাঁত ভেঙ্গে ভেঙ্গে যায়, ধারগুলো ক্ষয়ে যায় (গোড়া ক্ষয়ে যায়- মেজেরি, থুজা), স্কার্ভিরোগ হয়ে স্বাস্থ্য নষ্ট হয়।
১৩। তামাক খাবার স্পৃহা। পাকস্থালী পরিপূর্ণ তবুও ভীষণ খিদে পায়। পাকস্থলী ও তলপেট যেন শিথিল হয়ে ঝুকে পড়েছে বলে মনে হয় (এগারি, ইপি, ট্যাবা)।
১৪। পাথুরী অপারেশন বা ডিম্বাকোষে অপারেশন, পেট অপারেশন করার পর শূলবেদনা হলে ব্যবহার্য (বিসমাথ, হিপার)।
১৫। প্রসাব: নব বিবাহিতা মহিলাদের, যৌন সঙ্গমের পরে, কষ্টদায়ক প্রসাবের পর (ওপি) প্রসাবখানায় বহুক্ষণ দেরী করতে হয় (তবে প্রসাব হয়), যখন প্রসাব হয় না তখন মূত্রনালীতে জ্বালা করে। বৃদ্ধ বয়সে প্রষ্টেটগ্ল্যান্ডের দোষে প্রসাবের পরে যন্ত্রণা হয় ও মূত্রবেগ আসে। মূত্রথলী স্থানচ্যুত হয়।
১৬। যৌনেন্দ্রিয়ের বেদনাদায়ক অত্যনুভূতি। যোনিতে এত স্পর্শকাতরতা যে ন্যাকড়া ব্যবহার করা অসম্ভব হযে পরে (প্লাটিনা)।সর্বদা যৌন বিষয়ে চিন্তাভাবনা, সর্বদা য়ৌনতৃপ্তি বিষয়ে চিন্তা করতে থাকে।
১৭। বীর্যপাত হয়ে চোখ-মুখ বসে যায়, নিজেকে দোষীভাবে, লাজুক হয়ে পড়ে। বীর্যপাত হয়ে পিঠে ব্যথা হয়, দূর্বলতা আসে, যৌনেন্দিয় যেন অবসন্ন, শিথিল ও শুকিয়ে ছোট হয়ে যায়।
১৮। কাশি: শুধুমাত্র দিনে হয় বা দুপুররের আহারের পর শুরু হয়, গোস্ত খেলে কাশি বেড়ে যায়, রেগে গেলে বা বিরক্তি বা অসন্তোষ হলে কাশি বাড়ে, দাঁত মাজতে গেলে কাশি হতে থাকে। শীতকালে ক্রুপ কাশি, গরমকালে সায়েটিকা ব্যথার সাথে পর্যায়ক্রমে আসে। তামাক খেলে কাশি হতে থাকে (স্পঞ্জিয়া)।
১৯। পিঠে ব্যথা রাতে বিছানায় শুয়ে থাকলে ও সকালে ঘুম থেকে উঠার পর বেড়ে যায়। হাড়ের সন্ধিতে বিশেষতঃ আঙুলের হাড়ের সন্ধিতে বাতরোগ হয়ে গুটলি মত হয় (ইউরিক এসিড জমে) (কলোফা, কলচি, লাইকো), হাতের আঙুলে প্রদাহ হয় ঐ সাথে হাতে ঘাম হয় ও পুঁজ জন্মায়।
২০। ঘুমঘুম ভাব সারাদিন অথচ রাতে ঘুম হয় না, সারা দেহে কামড়ানো ব্যথা। জ্বর আক্রমনের কদিন আগে রাক্ষুসে ক্ষুধা হয়।
২১। একজিমা: একজিমা চুলকানিযুক্ত, একজায়গায় চুলকালে ঐখানে চুলকানি কমে কিন্ত অন্যখানে চুলকানি শুরু হয়। মামড়ির নীচ থেকে হলদে রঙের রস ঝরতে থাকে, রস হাজাকর, ঐ রস থেকে ফুস্কুড়ি হতে থাকে।
২২। আঁচিল: ডুমুরের মত, শুকনো, বোটার মত ঝুলতে থাকে। ফুলকপির মত আঁচিল, পারদ অপব্যবহারের কুফলে আঁচিল (এসি-নাই, স্যাবাইনা, থুজা) এসব লক্ষণে উপযোগী।
২৩। গর্ভাবস্থায় যে মুহুর্তে গাবমি বা বমিভাব ও মাথাঘোরা ভাব এসে উপস্থি হয় সেই মুহুর্তে স্ট্যফি প্রয়োগ করতে হয়, অর্থাৎ বমি শুরু হবার আগেও মুহুর্তে প্রয়োগ করতে হয়-টাস্টি।
২৪। সম্বন্ধ: কস্টি, কলোসি, ইগ্নে, লাইকো, পালস তুলনীয়। কলোসি ও স্ট্যাফি একটির পর অপরটি ভাল কাজ দেয়। কস্টি তারপর কলো তারপর স্ট্যাফি পরপর ভাল খাটে। অনিষ্টকারক- রেনানকুলাস।
২৫। বৃদ্ধি: মানসিক কারণে, রাগ, অসন্তোষ, দুঃখ, দুঃখপূর্ণ সংবাদ, জৈব তরলের অপচয়ে, তামাক খেয়ে, হস্তমৈথুন করে, অতিরিক্ত যৌনাচারিতা থেকে, আক্রান্ত অঙ্গে সামান্য ছোঁয়া লাগলে রোগ লক্ষণ বেড়ে যায়।