Rhus Tox (রাসটক্স): ডা.এইচ.সি.এলেন

Rhus Tox (রাসটক্স)
#নিজস্বকথাঃ
১। বর্ষায় বৃদ্ধি ও বিশ্রামে বৃদ্ধি।
২। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে কামড়ানি ও অস্থিরতা।
৩। অস্থিরতায় উপশম, উত্তাপে উপশম।
৪। জিহ্বার অগ্রভাগ ত্রিকোণ লাল বর্ণ ও জ্বরের শীত অবস্থায় কাশি।
#মূলকথাঃ
১। ছিঁড়ে ফেলার মত বা মচকে যাওয়ার মত ব্যথা, স্থিরভাবে শুয়ে বা বসে থাকলে ব্যথা বৃদ্ধি, কিছুক্ষণ নড়াচড়া করলে উপশম।
২। অত্যন্ত অস্থিরতা, বিছানায় একভাবে শুয়ে থাকতে পারে না, এপাশ ওপাশ করে, কারণ নড়াচড়াতে কিছুটা উপশম হয়।
৩। জিহ্বা শুষ্ক, ফাটা ফাটা, জিহ্বার অগ্রভাগ লাল ত্রিকোণাকার বা ত্রিভুজের মত।
৪। পরিশ্রম করা, নৌকা চালানো, সাঁতার কাটা ইত্যাদি বিষয়ে স্বপ্ন দেখে।
৫। জ্বর আসার পূর্বে ও শীত অবস্থায় শুষ্ক কাশি।
৬। গায়ে রসযুক্ত ফুস্কুড়ি বা ফোস্কা উঠে।
#উপযোগিতাঃ
১। বাতের অসুখে ভোগে, পানিতে ভিজে বিশেষতঃ দেহ অত্যাধিক গরম হয়ে তারপর ঠান্ডা পানিতে ভিজে তার কুফলে অসুখ হলে উপযোগী। বিশেষতঃ ফাইব্রাস তন্তু আক্রান্ত হয় (রডো), (সিরাস তন্তু আক্রান্ত হলে- ব্রায়ো), বামদিক হতে ডানদিক বেশী আক্রান্ত হয়।
২। দেহের কোন এক অঙ্গে পেশী বা পেশী বন্ধনী মচকে গিয়ে বা মুচড়ে গিয়ে (ক্যাল্কে.কা, নাক্সভম), ভারী দ্রব্য তুলে বা উপরে রাখা কোন কিছু হাত বাড়িয়ে ধরতে গিয়ে, ভিজের স্যাৎস্যাতে মাটিতে শুয়ে, গরমের দিনে খালে বা নদীর পানিতে অনেকক্ষণ ধরে গোছল করে- তা থেকে রোগ হলে উপযোগী।
৩। ব্যথাযন্ত্রণা: মচকে যাওয়ার মত, পেশী বা পেশী বন্ধনী যেন সন্ধিস্থান হতে ছিঁড়ে গেছে এমন মনে হয়, যেন হাড়গুলোকে ছুরি দিয়ে চেঁচে ফেলা হচ্ছে, মাঝরাতে পরে, ভেজা, বর্ষার দিনে যন্ত্রণা বাড়ে, আক্রান্ত অঙ্গ ছোঁয়া যায় না- টাটানি ব্যথা।
৪। বিশ্রামের পর প্রথম সঞ্চালনে বা সালে ঘুম থেকে উঠে খোড়াতে থাকে, হাত-পা আড়ষ্ট হয়ে থাকে ও যন্ত্রণা হয়, হাঁটা-চলায় বা অবিরত নড়াচড়ায় ঐ ভাব কমে যায় (এক নাগাড়ে নড়াচড়ায় আবার ব্যথা বেড়ে যায়, ক্লান্ত হয়ে পড়ে)
৫। অত্যন্ত অস্থিরতা, উদ্বেগ, ভীতিভাব (একোন, আর্স), বিছানায় একভাবে শুয়ে থাকতে পারে না, যন্ত্রণা হতে উপশমের জন্য অবিরত স্থান পরিবর্তনে বাধ্য হয় (মানসিক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা থেকে উপশমের জন্য ঐরকম করে-আর্স)। অস্থির- এক জায়গায় স্থির হয়ে থাকতে পারে না।
৬। পিঠ: কিছু গিলতে গেলে দু’কাঁধের মাঝের ব্যথা করে। কোমরের দু’পাশে ছোট গর্তমত স্থানে যন্ত্রনা ও আড়ষ্টতা, বসলে বা শুলে ঐ ব্যথা বাড়ে, নড়াচড়ায় বা শক্ত জিনিষের উপর শুলে কমে যায়। পেশীবাত ও সায়েটিকা বামদিকে হয় (কলোসিন্থ), হৃদরোগের সাথে বামহাতে কনকনানি ব্যথা।
৭। রাতে অত্যন্ত ভয়, ভয়ভাব, কেউ তাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবে এই ভয় হয়- বিছানায় শুয়ে থাকতে পারে না। কঠোর পরিশ্রমের স্বপ্ন দেখে যেমন-দাঁড়টানা, সাঁতার কাটা, দৈনন্দিন কার্যে কঠের পরিশ্রমের কাজ করা ইত্যাদি (ব্রায়ো)।
৮। মাথাঘোরা: উঠে দাঁড়ালে বা হাঁটলে মাথাঘোরে। শুয়ে থাকলে মাথাঘোরা আরো বেড়ে যায় (শুলে কমে- এপিস)। শোয়া অবস্থা থেকে উঠলে বা মাথা ঝুঁকালে মাথাঘোরা বাড়ে (ব্রায়ো)।
৯। মাথাযন্ত্রণা: পা ফেললে বা মাথা ঝাঁকালে মনে হয় যেন মস্তিষ্ক আল্গা হয়ে গেছে, মস্তিষ্কে পানির ছলাৎ ছলাৎ শব্দের অনুভূতি, বোকার মত ভাব হয়। বসে থাকলে, ঠান্ডার মধ্যে শুয়ে থাকলে বাড়ে, গরমে ও নড়চড়ায় মাথাযন্ত্রণার উপশম হয়।
১০। মুখ-গলা শুষ্ক, অত্যন্ত তৃষ্ণা। জিহ্বা শুষ্ক, ঘায়ের মত ব্যথা, লাল কাটাকাটা, জিহ্বার ডগায় ক্রিকোণ লাল ছাপ ও দাঁতের ছাপ পড়ে (চেলিডো, পডো) মুখে ঠোঁটের কোন ঘা হয়, মুখে ও গালে জ্বর ঠোসা বের হয় (নেট-মি)। ১১। সবিরাম জ্বর ও কাশি: শীতাবস্থার আগে ও সময়ে শুষ্ক বিরক্তিকর কাশি, শ্লেষ্মাতে রক্তেরমত স্বাদ, খোলা বাতাস সহ্য হয় না- বিচানার চাদর থেকে হাত বের করলে কাশি শুরু হয় (ব্যারাইটা, হিপার)। তরুণ রোগ টাইফয়েডের আকার ধারণ করলে উপযোগী।
১২। উদরাময়: টাইফয়েডের শুরুতে অসাড়ে উদরাময়, ঐ সাথে অত্যন্ত ক্লান্তিভাব, মলত্যাগের সময় দুপায়ের পিছন দিকে ছিঁড়ে ফেলার মত যন্ত্রণা হতে থাকে।
১৩। পক্ষাঘাত: আক্রান্ত অঙ্গ পানিতে ভিজে বা স্যাৎস্যাতে মাটিতে শুয়ে থেকে, পরিশ্রমের পরে, প্রসবের পর, অতিরক্তি যৌন সম্ভোগের পরে, শরীর ও হাত-পায়ে ব্যথাযুক্ত কম্পন জ্বর বা টাইফয়েডের পর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের আংশিক পক্ষাঘাত ও চোখের পাতা ঝুলে পড়ে এসব লক্ষণে উপযোগী।
১৪। চর্মে ইরিসিপেলাস বা বিসর্পরোগ, বামদিক হতে যান দিকে যায়, ফোস্কার মত হয়, হলদে ফোস্কা, ফুলে যায়, অনেক বেশী প্রদাহ হয়, জ্বালা করে, চুলকায়, হুল ফোটার মত যন্ত্রণা হয়। জননেন্দ্রিয়ের বাহিরের দিকে প্রদাহ, ইরিসিপেলাসের মত হয়, ফুলে যায়।
১৫। অনুপূরক- ব্রায়োনিয়া। তুলনীয়- আর্নিকা, ব্রায়োনিয়া, রডো, নেট-সা, সালফার। অনিষ্টকারক- এপিসের সাথে শত্রু সম্বন্ধ, এপিসের আগে বা পরে কখনই ব্যবহার করা চলবে না। রোগের ক্রনিক অবস্থায় উচ্চশক্তি সবচেয়ে বেশী সাফল্য পাওয়া গেছে-হেরিং।
১৬। বৃদ্ধি: ঝড়ের আগে, ঠান্ডা, ভেজা বর্ষার দিনে, রাতে বিশেষতঃ মধ্য রাতের পরে, ঘাম বের হবার সময় ভিজে বা গোছল করে, বিশ্রামের সময়।
১৭। উপশম: গরম, শুষ্ক দিনে, গায়ে ঢাকা দিলে, গরম বা মৃদু গরম দ্রব্যে, নড়াচড়ায়, অবস্থান পরিবর্তনে, আক্রান্ত অঙ্গ নাড়ালে।
১৮। কয়েকটি ক্ষেত্রে বাদে সব উপসর্গ বিশ্রামে শুরু হয় বা বেড়ে যায় ও নড়াচড়ায় কমে যায়। রাসটক্স বিষাক্ততায় জ্বালা ও চুলকানি সিপিয়া প্রায়ই তাড়াতাড়ি কমিয়ে দেয়, কয়েকদিনের মধ্যেই ফুস্কুড়িগুলো শুকিয়ে ফেলে। রাসটক্স বিষাক্ততায় কুফলে শক্তিকৃত রাসের উচ্চশক্তি দ্বারা সেরে যায়, ঐ থেকে উৎপন্ন চর্মরোগ কখনই বাহ্য প্রয়োগের ঔষধ (মলম) দিয়ে চিকিৎসা করতে নেই, এতে রোগ চাপা পড়ে মাত্র কখনই আরোগ্য হয় না।