Natrum Mur (ন্যাট্রাম মিউর): গুরুত্বপূর্ণ রুব্রিকসহ

ন্যাট্রাম মিউরিয়েটিকাম (Natrum Mur)।
DHMS (2nd year).
♣ সমনামঃ কমন সল্ট, টেবল সল্ট, ক্লোরেটাম সোডিয়াম।
♣ মায়াজমঃ সোরিক, সাইকোটিক, টিউবারকুলার।
♣ সাইডঃ ডানপাশ, বামপাশ, ওপরে বামপাশ নিচে ডানপাশ।
♣ কাতরতাঃ গরমকাতর, উভয়কাতর কিছু কিছু ক্ষেত্রে।
♣ উপযোগিতাঃ আলস্য, নম্রতা, ইন্দ্রিয়শক্তির মন্হরতা, তাড়াতাড়ি করে, ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা, জৈব উত্তাপের অভাব, স্তনদুগ্ধপায়ী শিশু, শ্লেষ্মাক্ষরণ বর্ধিত, শ্লেষ্মাপ্রধান ধাতু ব্যক্তি। অত্যাধিক রজোস্রাব হয়ে, বীর্যক্ষয় হয়ে বা মানসিক রোগে জৈব তরল পদার্থ নষ্ট হয়ে রক্ত শূন্যতা ধাতুবিকৃতি হলে এ ওষুধ উপযোগী।
♣ ক্রিয়াস্থলঃ পরিপোষণ প্রণালী-পরিপাকস্হল, অগ্নাশয়, পরিপাক পথের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি, মস্তিষ্ক, রস, রক্ত, মাংসপেশি, মন, হার্ট, গ্ল্যন্ডস, মিউকাস, প্লীহা, লিভার, চামড়া।
♣ বৈশিষ্ট্যঃ যারা খাবার লবণ ছাড়া আর কিছুই দেখে না কিন্তু সেই ন্যাট্রাম মিউরই অনেক বিষয়ে সমাধান দিয়ে থাকে। এটা কিছু ক্ষেত্রে ধারণাতীত হতে পারে যে শক্তিকৃত অবস্হায় ন্যাট্রাম মিউর স্বাধীনভাবে রোগ আরোগ্য করতে পারে অথবা রোগ উৎপাদন করতে পারে। এই সময়ে কাঁচা লবণ বেশি পরিমাণে পাকস্হলীতে গ্রহণ করে। এটি মনে করা যায় যে, অতি ক্ষুদ্র পরিমাণে বস্তু যা আমাদের শরীরের কলার প্রয়োজনীয় পদার্থ সম্ভবত এর কোনো ক্রিয়া নেই, কিন্তু এই সমস্যা একজন হোমিও চিকিৎসকের নিকট পূর্বে অবিচলিত এবং যদি সে ভালো অভিজ্ঞতার অধিকারী না হয় তা হলে ন্যাট্রাম মিউর ব্যবহারে তা সমস্যা হবে।
♣ ফিজিওলজিক্যাল কাজঃ নেট্রাম-মিউরের ফিজিওলজিক্যাল কাজ আলোচনা করলে দেখতে পাওয়া যায় যে, লবণ শরীরের সর্বঘটে বিরাজ করছে, এমন কি প্রত্যেক টিস্যু এবং দাঁতের বেষ্টনে পর্যন্ত প্রবেশ করতে ত্রুটি করে নি এবং যে সব টিস্যুতে লবণ বেশি পাওয়া যায় তাদের Stimulant বলে এটি (লবণ) পরিগনিত হয়। এটি চোখের রসযুক্ত স্হানগুলোতে বিশেষভাবে aqueous humor, crystalline lens এবং Vitrous humor – এ পর্যাপ্ত পরিমাণে বর্তমান থাকে। এরূপ কথিত রয়েছে যে, চোখের এরূপ স্হলে এর বর্তমানতায় স্হান বিশেষে টিস্যুগুলোর স্বচ্ছতা রক্ষা হয়। ডাক্তার ভির্চ্চো (Dr. Virchiw) পরীক্ষা করে দেখিয়েছেন, একটি কুকুরকে বেশি মাত্রায় ক্লোরাইড অফ সোডিয়াম দেয়ায় তার চোখের crystalline lent এর অস্বচ্ছতা উৎপন্ন হয়েছিলো। তবেই দেখা যাচ্ছে, নেট্রাম-মিউরে চোখের ছানি ঘটাতে এবং সারাতে পারে, এ উভয় ক্ষমতাই রয়েছে।
লবণ যে Stimulant এর কাজ করে তা আমরা পরিপাক ক্রিয়াতেও পরিষ্কাররূপে বুঝতে পারি- প্রথমতঃখাদ্যদ্রব্যকে স্বাদযুক্ত করে, খাদ্যদ্রব্যের স্বাদ আনয়ন করতে হলেই লবণই তার প্রধান উপাদান রূপে ব্যবহার হয়। লবণ gastric juice এর নিঃসরণ বাড়িয়ে পাকস্থালীর ক্রিয়াকে সাহায্য করে, এছাড়া শরীরের ছোট ছোট অনেক প্রকার গ্রন্থিতে বিশেষভাবে গণ্ডস্থল এবং নাকের পাশবর্তী স্হানগুলোর গ্রন্হিতে কাজ করে মুখমণ্ডলের চামড়াকে তৈলাক্ত এবং মসৃণ করে, এছাড়া পেশিতেও যথেষ্ট কাজ রয়েছে; দুর্বল পেশিকে সবল করে, এরূপ দেখা যায় পেশি এবং স্নায়ুর দুর্বলতা প্রযুক্ত হাত পায়ের বিকৃতিতে লবণের বাহ্যিক ব্যবহারে সাময়িক ফল পাওয়া যায়- এর দ্বারাই মনে হয় লবণের পেশি এবং স্নায়ু সবল করার যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে।
♣ সারসংক্ষেপঃ আলস্য, নম্রতা, ইন্দ্রিয়শক্তির মন্হরতা, জৈব তরল পদার্থ নষ্ট হয়ে রক্ত শূন্যতা ও শ্লেষ্মাপ্রধান ধাতু ব্যক্তি। গলার মাঝে প্লাগ থাকার অনুভূতি। প্রাতে, প্রাত ১০টায়, পূর্বাহ্নে, দৈহিক পরিশ্রমে, ময়দা দ্বারা প্রস্তুত খাবারে, ঋতুস্রাবের আগে ও প্রারম্ভে, গরমে, সূর্যোত্তাপে, মানসিক পরিশ্রম ও সান্তনায় বাড়ে। ঠাণ্ডা পানিতে গোসলে, শুয়ে থাকলে, ঘামের পরে, চাপে, দীর্ঘ শ্বাসে, ডানপাশে শয়নে ও কাপড় এঁটে পরলে কমে। ক্রোধ-খিটখিটে, উৎকণ্ঠা,প্রেমাতুর, নির্বাক দুঃখ, বিষণ্নতা, অত্যানুভূতিযুক্ত, ঔদাসীনতা, প্রলাপ, অসন্তুষ্ট, স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা, কাঁদে। তেতো ও লবণপ্রিয়তা। প্রকাশ্য স্হানে প্রস্রাব করতে লজ্জাবোধ। পুরনো আশাভঙ্গ হতে রোগোৎপত্তি। দীর্ঘ সময় অবনত হয়ে থাকলে কোমর বা পিঠ ব্যথা করে। ঘামাবস্হায় মাথাব্যথা ছাড়া অন্য সকল লক্ষণের উপশম। শীর্ণতা, স্বপ্নসঞ্চরণ, রক্তাল্পতা ও রক্তস্রাব।
♣ বিশেষ লক্ষণঃ ১) পুরনো আশাভঙ্গ হতে রোগোৎপত্তি। ২) দীর্ঘ সময় অবনত হয়ে থাকলে কোমর বা পিঠ ব্যথা করে।
♣ অনুভূতিঃ ১) জিবে চুল থাকার অনুভূতি। ২) উত্তাপের ঝলকাবোধ: ঘুমের সময়, যেনো গরম পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে এরূপ। ৩) উত্তাপের অনুভূতি : জাগলে, রক্তবহা নালিগুলোতে। টেনে লম্বা করার অনুভূতি।
♣ ক্রম ও সহচর লক্ষণঃ ১) নির্দিষ্ট সময়ে বমি বমি ভাবের সাথে মাথা ঘোরায়। ২) সেলাই কাজ করার সময় বস্তুগুলো একত্রে দৌড়াতে থাকে। ৩) শীতাবস্হার সাথে অনেক দেরিতে মাসিক ঋতুস্রাব/রক্তের পরিমাণ অনেক কম হয়। ৪) দুপুরের খাবারের পরে ঘুমালে স্বপ্নের দ্বারা ঘুম বাধাপ্রাপ্ত হয়।
< বৃদ্ধিঃ দিবাভাগে, প্রাতে, প্রাত ১০টায়, পূর্বাহ্নে, ময়দা দ্বারা প্রস্তুত খাবারে, ঋতুস্রাবের আগে ও প্রারম্ভে জাগরণে।
> হ্রাসঃ খোলা বাতাসে, ঠাণ্ডা পানিতে গোসলে, ঠাণ্ডা লাগালে, দৈহিক পরিশ্রমে, শুয়ে থাকলে, শুয়ে থাকার পরে, বিছানায় শুলে, একপাশে চেপে শুলে, ঘামের পরে, চাপে, দৌড়ালে, হাঁটলে, দ্রুত প্রকোপের পর। বিশ্রামে, উপবাসে, কাপড় এঁটে পরলে, দীর্ঘ শ্বাসে, সকালের নাস্তার আগে, ডানপাশে শয়নে, কথা বললে, মর্দনে, কোমরে শক্ত জিনিস দিয়ে চিৎ হয়ে শয়নে কোমর ব্যথা, পেট ভরে না খেলে, খোলা বাতাসে, পিঠে চাপ দিলে।
♣ কারণঃ শোক, দুঃখ, ক্রোধ, ভয়, বিরক্তি, জৈব পদার্থের অপচয়, প্রচুর ঋতুস্রাব, অতিরিক্ত যৌনেচ্ছা, মাথা আঘাত, হস্ত মৈথুন, কুইনাইন, রুটি, চর্বি, মদ, অম্ল খাদ্য, লবণ, উত্তেজনা, আশাভঙ্গ, অ্যাসিড ফুড।
♣ ইচ্ছাঃ লবণ, লবণ দেয়া খাদ্য, তিতো খাবার, শ্লেট-পেন্সিল, ছাই, মাটি, দুধ, মিষ্ট, চিংড়িমাছ।
♣ অনিচ্ছাঃ কফি, মাংস, তামাক, চর্বি, খোলা বাতাস, রুটি ও মাখন।
♣ ক্রিয়ানাশকঃ আর্জ-নাই, আর্স, (সমুদ্র গোসলের কুফলে), ক্যাল্ক, নাক্স-ভ, নাই-স্প্রি-ডাল, ফস (বিশেষ করে খাদ্যে লবণ অপব্যবহারে), ক্যাম্ফর, অ্যাপিস, সিপি।
♣ প্রয়োগঃ পুরাতন ম্যালেরিয়া রোগের ক্ষেত্রে এটি একটি অপূর্ব ওষুধ। ৩০ শক্তির নিম্নে এর ব্যবহার ঠিক নয়। -ডা. অ্যানশুজ।
= উপরোক্ত লক্ষণ সাদৃশ্যে যে কোন রোগেই আমরা ন্যাট্র-মি প্রয়োগ করতে পারবো।

গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি রুব্রিকঃ (ক্যান্ট রেপার্টরী অনুযায়ী)
১) অন্যমনষ্ক ( Absent- minded) / অন্য বিষয়ে নিবিষ্টচিত্ত ( Pre-occupied) – A= অ্যাপিস, ক্যানা-ই, কস্টি, ক্যামো, হেলি, ল্যাকে, মেজের, ন্যাট্র-মি, নাক্স-ম, প্লাটি, পালস, সিপি, ভিরেট।
২) ক্রোধ (Anger) ঃ-খিটখিটে ভাব- অ্যাকোন, অ্যানাকা,আর্স, অরাম, ব্রায়ো, ক্যামো, ইগ্নে ক্যালি-কা,ক্যালি-সাল, লাইকো, ন্যাট্র-মি, নাই-অ্যামি,নাক্স-ভ, পেট্রো,সিপি,স্ট্যাফি, সালফ।
৩) লোকসঙ্গ (Company) বিতৃষ্ণা / সমাজ (Society)/ নির্জনতা (Solitude)- A= অ্যানাকা, ব্যারা-কা, কার্বো-অ্যানি, ক্যামো, সাইকু, জেলস, ইগ্নে, ন্যাট্র-মি, নাক্স-ভ।
৪) লোকসঙ্গ বিতৃষ্ণা: মূত্রত্যাগ কালে- A= ন্যাট্র-মি।
৫) সান্ত্বনা দিলে বৃদ্ধি (Consolation)- A= ইগ্নে, ন্যাট্র-মি, সিপি, সাইলি।
৬) অসন্তুষ্ট (Discontented ), অসুখী (Displeased), অতৃপ্ত (Dissatisfied): অ্যানাকা, ক্যাল্ক-ফস, মার্ক, ন্যাট্র-মি।
৭) ভয় (Fright) হতে রোগ- A= অ্যাকোন, ইগ্নে, লাইকো, ন্যাট্র-মি, ওপি, ফস-অ্যাসি, ফস, পালস, সাইলি। B= অ্যাপিস, আর্জ-নাই, আর্টিমি, অরাম, বেল, কস্টি, কফি, কুপ্রা, জেলস, গ্লোন, গ্র্যাফ, হায়োস, হাইপেরি, ল্যাকে, নাক্স-ভ, সিপি।
৮) তাড়াতাড়ি করে ( Hurry) : A- লিলি-টি, মেডো, মার্ক, ন্যাট্র-মি, সালফ, সাল-অ্যাসি, ট্যারেন্টু।
৯) উত্তেজনাপ্রবণতা (Irritability) – A= অ্যাকোন, অ্যালু, অ্যান্টি-ক্রু, অ্যাপিস, অরাম, বেল, বোভি, ব্রায়ো, ক্যাল্ক, কার্বো-সাল, কস্টি, ক্যামো, গ্র্যাফ, হিপার, ক্যালি-কা, ক্যালি-আই, ক্যালি-সাল, লিলি-টি, লাইকো, ন্যাট্র-কা, ন্যাট্র-মি, নাই-অ্যাসি, নাক্স-ভ, পেট্রো, ফস-অ্যাসি, ফস, প্ল্যাট, পালস, র্যানান-বা, রাস, সিপি, সাইলি, স্ট্যাফি, স্ট্রিকনি, সালফ, সাল-অ্যাসি, থুজা, ভিরেট-ভি, জিঙ্ক।
১০) প্রেম,হতাশা প্রেম হতে রোগ (Love, ailments, from disappointed) – A= হায়োস,ইগ্নে, ন্যাট্র- মি,ফস-অ্যাসি ।
১১) নম্রতা (Mildness) / শান্তভাব ( Gentleness) – A= আর্নি, আর্স, বোরা, ককুল, ন্যাট্র-মি, পালস, রাস, সাইলি।
১২) চমকে ওঠে, হঠাৎ চকিত হয় (Starting, startled) A= আর্স, বেল, ব্রায়ো, ক্যাপসি, হায়োস, ল্যাক-ক্যান, ন্যাট্র-আর্স, ন্যাট্র-মি, স্ট্র্যামো, স্ট্রনসি।
১৩) প্রাতে (Morning) বাড়ে- A= অ্যাগারি, অ্যামন-মি, আর্জ-মে, আর্স-আই, অরাম, ব্রায়ো, ক্যাল্ক, ক্যাল্ক-ফ্লু, কার্বো-অ্যানি, কার্বো-সাল, কার্বো-ভে, ক্যামো, চেলিডো, সিনা, ক্রোকা, ক্যালি-বাই, ক্যালি-নাই, ল্যাকে, ন্যাট-আর্স, ন্যাট্র-মি, নাই-অ্যাসি, নাক্স-ভ, ওনোস, পেট্রো, ফস-অ্যাসি, ফস, পালস, রডো, রাস, রোমেক্স, সিপি, স্পাইজে, স্কুই, সালফ, ভ্যালের ।
১৪) প্রাত ১০টায় : বাড়ে- A= ন্যাট্র-মি। C= সিমিসি, জেলস, নাক্স-ভ।
১৫) পূর্বাহ্নে ( Forenoon) বাড়ে- A= ক্যানা-স্যা, ন্যাট্র-কা, ন্যাট্র-মি, পডো, স্যাবাডি, সিপি, স্ট্যানাম, সালফ, ফস-অ্যাসি।
১৬) রক্তাল্পতা ( Anaemia) – A= আর্স, বোরা, ক্যাল্ক, ক্যাল্ক-ফস, চায়না, ফেরাম, ফেরা-আর্স, গ্রাফ, হেলি, ক্যালি-আর্স, ক্যালি-কা, ক্যালি-ফস, ম্যাঙ্গে, মেডো, মার্ক, ন্যাট্র-মি, নাই-অ্যাসি, ফস, প্লাম্বা, পালস, স্কুই, স্ট্যাফি, সালফ।
১৭) ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা- A=অ্যাকোন, অ্যালু, ব্যারা-কা, ব্রায়ো, ক্যালি-ফস, ক্যামো, ডালকা, হিপার, ক্যালি-কা, ক্যালি-ফস, লাইকো, মার্ক, ন্যাট্র-আর্স, ন্যাট্র-মি, নাই-অ্যাসি, নাক্স-ভ, সোরিন, রিউমেক্স, সিপি, সাইলি, টিউবার ।
১৮) শীর্ণতা ( Emaciation)- A= অ্যাব্রোটে, আর্স, আর্স-আই, ব্যারা-কা, ক্যাল্ক, ক্যাল্ক-আই, চায়না, ফেরাম, গ্র্যাফ, হেলি, আই, লাইকো, ন্যাট্র-হা, ন্যাট্র-মি, নাই-অ্যাসি, নাক্স-ভ, ফস, প্লাম্বা, সেলি, সাইলি, স্ট্যানা, সালফ, টিউবার।