রেপার্টরী পড়ার কৌশল-ডা. আহাম্মদ হোসেন ফারুকী

১. রেপার্টরীর সংজ্ঞা : হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরী হচ্ছে সেই গ্রন্থ, যে গ্রন্থে মানুষের শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রকাশিত প্রায় সকল লক্ষণসমূহ ইংরেজী বর্ণমালার ক্রম অনুসারে এবং ঔষধের গুরত্ব অনুযায়ী লিপিবদ্ধ রয়েছে।
২. রুব্রিক : রোগীর কষ্টগুলোকে মেটেরিয়া মেডিকার ভাষায় লক্ষণ বলে। আর রেপার্টরীর ভাষায় রোগীর কষ্ট বা সমস্যা গুলোকে রুব্রিক বা শিরোনাম বলে।
৩. প্রধান রুব্রিক : কেন্ট রেপার্টরীতে প্রধান রুব্রিকগুলো ইংরেজি বর্ণমালার বড় হাতের অক্ষর ও মোটা অক্ষরে লেখা রয়েছে। যেমন- PAIN
৪. প্রধান রুব্রিক সাজানো : কেন্ট রেপার্টরীতে প্রত্যেকটি অধ্যায়ের মধ্যে প্রধান রুব্রিকগুলো ইংরেজি বর্ণমালা ক্রমে বা ইংরেজি ডিকশনারীর ন্যায় A থেকে Z পর্যন্ত সাজানো আছে। কোন অধ্যায়ে যদি ইংরেজি বর্ণমালার শুরুর দিকের কোন বর্ণ দিয়ে কোন রুব্রিক পাইতে চান তাহলে সেই অধ্যায়ের প্রথম দিকে খুঁজতে হবে। আর যদি ইংরেজি বর্ণমালার মাঝের বর্ণ দিয়ে কোন রুব্রিক পাইতে চান তাহলে সেই অধ্যায়ের মাঝের দিকে খুঁজতে হবে। আর যদি ইংরেজি বর্ণমালার শেষের বর্ণ দিয়ে কোন রুব্রিক পাইতে চান তাহলে সেই অধ্যায়ের শেষের দিকে খুঁজতে হবে।
৫. সাব রুব্রিক : যে রুব্রিকগুলো প্রধান রুব্রিক এর নিচে একটু ডান দিকে বা ভিতরে অবস্থান করে তাকে সাব রুব্রিক বলে। সাব রুব্রিকগুলোর ও একাধিক সাব রুব্রিক থাকতে পারে।
৬. সাব রুব্রিক সাজানো : প্রধান রুব্রিক এর নিচে যে সাব রুব্রিকগুলো থাকে সে গুলো ইংরেজি বর্ণমালাক্রমে A থেকে Z পর্যন্ত সাজানো। এগুলো ইংরেজি ছোট অক্ষরে লেখা।
৭. সাবের সাবগুলো ও ইংরেজি বর্ণমালাক্রমে সাজানো।
৮. সাব রুব্রিক এর চিত্র : HEAD
PAIN
pressing
Forhead
morning
rising after
amel
walking
forenoon————-p-193
৯. গ্রেডিং : কেন্ট রেপার্টরীতে ঔষধ ও রুব্রিক এর গুরুত্ব অনুসারে ঔষধগুলোকে ৩ টি গ্রেডে সাজানো বা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন-
ক. ফার্স্ট গ্রেড : যে ঔষধগুলোর প্রথম অক্ষর বড় হাতের এবং মোটা ও সাধারন ভাবে লেখা যার গাণিতিক মান ৩।
খ. সেকেন্ড গ্রেড : যে ঔষধগুলো চিকন ভাবে ইটালিক বা বাঁকা অক্ষরে লেখা যার গাণিতিক মান ২।
গ. থার্ড গ্রেড : যে ঔষধগুলো স্বাভাবিক অক্ষরে লেখা যার গাণিতিক মান ১।
১০. স্যার আপনি যেভাবে অধ্যায়গুলো অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে কয়েক মিনিটে আয়ত্ব করিয়েদেন আমি সে ভাবে পারবনা তাই স্বাভাবিক ভাবে বলে দিচ্ছি। কেন্ট রেপার্টরিতে ৩৭ টি অধ্যায় রয়েছে। যথা :
1. Mind
2.Vertigo
3. Head
4. Eye
5. Vision
6. Ear
7. Hearing
8. Nose
9. Face
10. Mouth
11.Teeth
12.Throth
13. External Throat
14. Stomach
15. Abdomen
16. Rectum
17. Stool
18. Bladder
19. Kidneys
20. Prostate Gland
21. Urethra
22. Urine
23. Genitalia
24. Genitalia Female
25. Larynx and Trachea
26. Respiration
27. Cough
28. Expectoration
29. Chest
30. Back
31. Extremities
32. Sleep
33. Chill
34. Fever
35. Perspiration
36. Skin
37. Generalities.

১১. সাব অঙ্গ : প্রত্যেক অধ্যায়ের মধ্যে যে সাব অঙ্গ রয়েছে তা ইংরেজি বর্ণমালাক্রমে সাজানো এবং প্রথম অক্ষর বড় হাতে লেখা থাকে আর বাকিগুলো ছোট অক্ষরের হয়। সাব অঙ্গগুলো মোটা অক্ষরে লেখা থাকে। একটি সাব অঙ্গের কাজ শেষ হলে অন্য সাব অঙ্গের কাজ শুরু হয়। যেমন : HEAD অধ্যায়ের সাব অঙ্গ গুলো হলো- Bone, Brain, Forehead, Occiput, Temple, Vertex ইত্যাদি।
১২. রুব্রিক এর চরিত্র : রুব্রিক এর চরিত্রগুলো ইংরেজি বর্ণমালাক্রমে সাজানো এবং একটি চরিত্রের কাজ শেষ হলে অন্য একটি চরিত্রের কাজ শুরু হয়। যেমন : HEAD অধ্যায়ের প্রধান রুব্রিক Pain এর চরিত্র গুলো হলো – Aching, Biting, Burning, Cutting, Drawing, Grinding, Jerking, Lancinating, Pressing, Shooting, Stitching ইত্যাদি।
১৩. রেপার্টরীতে কোন কিছুর বৃদ্ধি হলে ইংরেজিতে Agg (Aggravation) আর কোন কিছুর হ্রাস হলে ইংরেজিতে Amel (Amelioration) বুঝায়। যেখানে Agg ev Amel কোনটিই নাই সেখানে সমস্যা দেখা দেয় বা উৎপত্তি অথবা বৃদ্ধি হিসেবে ধরে নিতে হবে।
১৪. রেপার্টরীতে মাইল মিটার ঃ কোন অধ্যায়ের মধ্যে প্রধান রুব্রিক এর সাথে চলমান সাব রুব্রিক যদি পূর্ববর্তী পৃষ্ঠায় শেষ না হয় সেক্ষেত্রে সেই সাব রুব্রিকটি পরবর্তী পৃষ্ঠায় প্রধান রুব্রিক এর সাথে উল্লেখ থাকবে। এই মাইল মিটারের সাহায্যে কাঙ্খিত রুব্রিকটিতে পৌছানো সম্ভব।
১৫. রেপার্টরীতে লক্ষণ অনুসারে ঔষধ সহজে বের করার জন্য একটি রুব্রিককে ১৬ টি স্তরে সাজানো হয়েছে। নিচে ছক আকারে তা দেওয়া হল ঃ- যেমন HEAD অধ্যায়ের প্রধান রুব্রিক PAIN ৮৯ পৃষ্ঠা-
এই পৃষ্ঠাগুলিকে প্রথমে দুই ভাগে ভাগ করা হয় যথা-১। সাধারণ লক্ষণ ২। চরিত্রগত লক্ষণ।
১। সাধারণ লক্ষণ-আবার দুই প্রকার যথা-(১) সমগ্র অঙ্গের সাধারণ লক্ষণ
(২) অঙ্গের অংশ বিশেষের সাধারণ লক্ষণ
২। চরিত্রগত লক্ষণ- আবার দুই প্রকার যথা-
(১) সমগ্র অঙ্গের চরিত্রগত লক্ষণ
(২) অঙ্গের অংশ বিশেষের চরিত্রগত লক্ষণ
ছক-
১। সাধারণ লক্ষণ-
১। সমগ্র অঙ্গে-
১। পার্শ্ব (Side) : মাথার ডান পাশে ব্যথা।
২। সময় (Time) : সকাল ৯ টায় মাথা ব্যথা।
৩। শর্ত (Condition) : চুলার উত্তাপে মাথা ব্যথা।
৪। বিস্তৃতি (Extending) : মাথা ব্যথা চোখ পর্যন্ত ছড়ায়।
২। অঙ্গের অংশ বিশেষ-
১। পার্শ্ব (Side): কপালের ডান পাশে ব্যথা।
২। সময় (Time): সকাল ৯ টায় কপালে ব্যথা।
৩। শর্ত (Condition) : চুলার উত্তাপে কপালে ব্যথা।
৪। বিস্তৃতি (Extending) : কপালের বাম পাশ থেকে ডান পাশে ছড়ায়।
২। চরিত্রগত লক্ষণ-
৩। সমগ্র অঙ্গে-
১। পার্শ্ব (Side) :মাথার ডান পাশে জ্বালাকর ব্যথা।
২। সময় (Time) : সকাল ৯ টায় মাথার ডান পাশে জ্বালাকর ব্যথা।
৩। শর্ত (Condition) : চুলার উত্তাপে মাথায় জ্বালাকর ব্যথা
৪। বিস্তৃতি (Extending) : মাথার জ্বালাকর ব্যথা চোখ পর্যন্ত ছড়ায়।
৪। অঙ্গের অংশ বিশেষ-
১। পার্শ্ব (Side) : কপালের ডান পাশে জ্বালাকর ব্যথা।
২। সময় (Time): সকাল ৯ টায় কপালে জ্বালাকর ব্যথা।
৩। শর্ত (Condition) : চুলার উত্তাপে কপালে জ্বালাকর ব্যথা।
৪। বিস্তৃতি (Extending) : কপালের জ্বালাকর ব্যথা বাম পাশ থেকে ডান পাশে ছড়ায়।
16. কেন্ট রেপার্টরীর সাধারণ(GENERALITIES) অধ্যায়টি যেভাবে ব্যবহার করবে ? একটি উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবে কিভাবে সাধারণ অধ্যায়টি ব্যবহার করতে হয়।
যেমন- কপালে চাপনবৎ বেদনা গোসলে বৃদ্ধি।
1. HEAD, PAIN, Pressing Forhead, Bathing agg.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
2. HEAD, PAIN, Pressing Forhead, Bathing.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
3. HEAD, PAIN, Pressing, Bathing agg.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
4. HEAD, PAIN, Pressing, Bathing.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
5. HEAD, PAIN, Forhead, Bathing agg.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
6. HEAD, PAIN, Forhead, Bathing.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
7. HEAD, PAIN, Bathing agg.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
8. HEAD, PAIN, Bathing.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
9. HEAD, Bathing agg.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
10. HEAD, Bathing.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
11. GENERALITIES, Gi PAIN, Pressing Bathing agg.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
12. GENERALITIES, Gi PAIN, Pressing Bathing.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
13. GENERALITIES, Gi PAIN, Bathing agg.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
14. GENERALITIES, Gi PAIN, Bathing.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
15. GENERALITIES, Gi Bathing agg.
এখানে না পেলে নিচে দেখবে-
16. GENERALITIES, Gi Bathing.
এই ভাবেই এক জায়গায় না পেলে অন্য জায়গায় খুঁজতে হবে।
এছাড়া যখন রোগী আমার ব্যবহার করে কোন সমস্যা বলে সে ক্ষেত্রে GENERALITIES.
অথবা রোগী সামগ্রীক বা সর্বাঙ্গ বুঝিয়ে কোন লক্ষণ বলেন সে ক্ষেত্রে GENERALITIES, দেখতে হবে।
১৭. রেপার্টরীতে চর্মের লক্ষণ সহজে খোঁজার কৌশল :
১. রোগীর চর্মের সমস্যা যদি সার্বদৈহিক হয়, যেমন- হাম, পক্স, এলার্জী, ঘামাচি, দাদ ইত্যাদি। এই সব খুঁজবে- SKIN, ERUPTION- এ
২. যদি রোগীর চর্মের সমস্যা দেহের কোন অঙ্গের বা অঙ্গের অংশ বিশেষের হয় সে ক্ষেত্রে সেই অঙ্গের মধ্যে খুঁজতে হবে। যেমন- মাথায় একজিমা এ ক্ষেত্রে HEAD, ERUPTION, বপুবসধ দেখতে হবে।
আশরাফুল তুমি যেভাবে এতক্ষণ রেপার্টরী ব্যবহারের কৌশল সম্পর্কে বললে আমি আশাকরি উপস্থিত ডাক্তাগণ তোমার আলোচনা বোঝেছেন এবং তোমার এই কৌশল মনে রাখতে পারলে সকলেই দ্রুত রেপার্টরী ব্যবহার করতে পারবে।