মেন্টাল মেথড চিকিৎসার উপসংহার
ডাঃ রবিন বর্মন
আমি সবসময়ই মেন্টাল মেথড অফ ট্রিটমেন্ট নীতির সমালোচনা করছি, এই চিকিৎসা পদ্ধতির আবিষ্কারকের সমালোচনা করছি , কোন নির্দিষ্ট মানুষের নয়।
তবে প্রতিটি পোস্টে দেখা যায় বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে, তার নিজস্ব মতামত কমেন্টে কিছু লেখার সুযোগ থাকায় তা প্রকাশ করে। সেটা ত আমার দোষ নয়, তা কন্ট্রোল করার কোনও রাস্তা আমাদের কারুরও নেই। সবার ক্ষেত্রেই এটা নিশ্চয়ই একটা সমস্যা।
গতকাল একটা পোস্ট করেছিলাম যেখানে এই মেথড পছন্দ করেন এবং এই মেথডের মাধ্যমে চিকিৎসা করেন এমন একজন শিক্ষিত মানুষ ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন কে অন্য একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক প্রশ্ন করেছেন—আপনারা ডাঃ রবীন বর্মনের তোলা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না কেন? কিন্তু মোয়াজ্জেম সাহেব অন্যভাবে কথা ঘুরিয়ে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গেছেন, সেইটাই সবাই কে জানাতে চেয়েছি, যে, উনারা কিছু না বুঝাতে পেরে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাচ্ছেন। অন্য কোন খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে, যেমন humiliation করার উদ্দেশ্য নিয়ে ঐ পোস্ট করা হয় নি। ওখানে দেখবেন কমেন্টের ঘরে ডাঃ সত্যেন পাল লিখেছেন—- কেউ একজন সিঙ্গেল মেডিসিনের মাধ্যমে, তা সে মানসিক লক্ষনের উপরেই হোক না কেন, যদি রোগী আরোগ্য করতে পারে, আমাদের অসুবিধা কোথায়? কথাটা 100 ভাগ সত্য, যার জন্য আমি ওনাকে লাইক দিয়েছি।
কিন্তু যে প্রশ্নটা আমাদের মনে সতত উদয় হচ্ছে —সবক্ষেত্রে কি সব কেস এইভাবে সারানো সম্ভব? আমার মনে হয়, না। আমরা বিশ্বাস করি না। সেই জন্য নীতিটার সমালোচনা করছি। যদি কেউ ঐভাবে রোগ সারাতে পারে আমাদের আপত্তির কিছুই নেই । কিন্তু তাহলে এই মেথডে কিছুদিন চিকিৎসার তালিম নেওয়ার পরেও অনেক চিকিৎসকদের এত অসন্তুষ্ট হওয়ার লেখালেখি কেন?
যাই হোক, আমি বারবার এই মেথডের বিরুদ্ধে বলছি, বা প্রতিবাদ করছি, তার দুটি কারন—
১) যেহেতু বিশ্বাস করি না , মানি না , মানার মতন কোন প্রমান পাচ্ছি না, তাই অদূর ভবিষ্যতে বহু টাকা খরচ করে, বহু বইপত্র ক্রয় করে চিকিৎসায় সাফল্য লাভ না করতে পেরে যেন একজন জুনিয়র চিকিৎসক হোমিও চিকিৎসার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে বীতশ্রদ্ধ না হয়ে পড়ে। তাই হোমিওপ্যাথির স্বার্থে, হোমিওপ্যাথিকে বাঁচানোর স্বার্থে, নব্য যুবকদের অবধারিত বিপদগামী পথ থেকে ফেরানোর বা বাঁচানোর স্বার্থে ব্যক্তিগতভাবে আমার এই প্রয়াস। প্রচুর কমেন্টে ত এর বিরুদ্ধে বিষোদগার দেখাই যাচ্ছে–
প্রত্যহ অহরহ অনেকেই অকপটে তা স্বীকার করেছে। অনেকেই পরিষ্কার বলছে, আমার দুই বছর সময় বৃথা নষ্ট হয়েছে, আমার অনেক বই কিনে বাজে অর্থের অপচয় হয়েছে— বইগুলি ফেলে দিয়েছি, এই মেথড আমার কোন কাজে লাগে নি, আমি ফ্রাস্ট্রেটেড, এটা একটা লোক ঠকানো ব্যবসা, এটা এক ধরনের জালিয়াতি, ইত্যাদি, ইত্যাদি ।
যদি ভালোই হবে, যদি প্রতিটি রোগী সঠিকভাবে আরোগ্য হবে, তাহলে এত জুনিয়র চিকিৎসকদের বাজে, বিরক্তিকর, অাপত্তিকর সমালোচনা হবে কেন ? তাদের মনের এত বিরুদ্ধ ভাব প্রকাশ পাবে কেন ? তাদের মনের কোনে এত ক্ষোভ কেন?
২) আমার আলোচনার বা লেখালেখির দ্বিতীয় কারণ হলো– এটাকে নিয়ে একটা ব্যবসা চলছে। এক শ্রেণীর মানুষ —- দু- চার দিন অন্তর পোস্টারিং বা প্রচার করছে——হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার আদর্শ নীতি গ্রহণ করো, —— এসো, সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করো, ——- সঠিক মেথডের মাধ্যমে রোগী সারাও, ইত্যাদি , স্লোগান তুলে—-এখান থেকে , ওখান থেকে যাদের নাম আমরা জানি না, আসল হোমিওপ্যাথি জগতে যাদের কোন অস্তিত্ব নেই, তাদেরকে নিয়ে লোক ঠকানোর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, অবশ্যই ডেলিগেট ফি নামে মোটা টাকা হাতিয়ে। বিশেষ করে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে, সর্বত্র।
তাই একজন জুনিয়র ডাক্তার— মানে বুকে একরাশ আশা নিয়ে সবেমাত্র পাস করা একজন কমবয়সী চিকিৎসক, —- যার কাছে অর্থের অত্যন্ত মূল্য, যোগাড় করাও কঠিন, সে শেখার জন্য , জানার জন্য এই পদ্ধতিতে নাকি ভালোভাবে রোগ সারানো যাবে , সেই মরীচিকার টানে, বা বিজ্ঞাপনের রঙীন মোহজালে আবদ্ধ হওয়ার জন্য বহু কষ্টার্জিত টাকা পয়সা খরচ বন্ধ করুক, অর্থাৎ তাকে বাঁচানোর জন্য আমার এই প্রয়াস।
মেন্টাল মেথডের চিকিৎসা কি খুবই খারাপ? না, মোটেই না। বরং যারা পেটেন্ট বা টনিক দিয়ে চিকিৎসা করেন, কম্বিনেশন দেন, কিম্বা কলকাতার পি. ব্যানার্জি কোং দের মতন পাঁচটি/ দশটি ঔষধ একত্রে মিশিয়ে দিচ্ছেন — তাদের থেকে নিঃসন্দেহে অনেক উঁচুদরের চিকিৎসা পদ্ধতি এদের । এরা সিঙ্গেল মেডিসিন ব্যবহার করছেন, শক্তিকৃত ঔষধ ব্যবহার করছেন, সিমপটমস সিমিলারিটি মেলাচ্ছেন।
কিন্তু এই সিমপটমস সিমিলারিটি মেলানোটা আমরা বলতে চাইছি অসম্পূর্ণ হচ্ছে । কারন– সার্বদৈহিক সিমপটমস মেলানোটাই হচছে হোমিওপ্যাথির টোটালিটি। উনারা শুধু একজন মানুষের মস্তিস্কের চিন্তাধারাটা নিতে চাইছেন, তা ত হয় না। বলছেন— মনই আসল। সে ত আমরাও মানি, সে ত সবাই জানে, সবাই মানে। মনই ত শরীরকে পরিচালনা করে। কিন্তু শুনতে খারাপ লাগলেও বা লিখতে খারাপ লাগলেও বলি —একজন পুরুষের মনে যদি সেক্সুয়াল উত্তেজনা হয়, স্ত্রীর কাছে যেতে চায়—- কিন্তু পেনিস নেই, কি হবে? শুধু মন কি তার উত্তেজনা প্রশমিত করতে পারবে?
অনেকবার অনেক উদাহরণ দিয়েছি এবং বলেছি, যে, শুধু মানসিক লক্ষণের উপরে ভিত্তি করে কখনই সব রোগ সারানো যাবে না , যায় না , হবে না, হতে পারে না।
একজন রোগীর খুব স্ট্রং মানসিক লক্ষণ থাকলে একটিমাত্র মানসিক লক্ষন দিয়েও আমরা বহু সময়, বহু কেসে ঔষধ সিলেকশন করি। একটিমাত্র মানসিক সিমপটম দিয়েও একটি প্রেসক্রিপশন করা যেতে পারে এবং রোগী আরোগ্যও হতে পারে, যদি— তা একটি ওয়েটি, নির্ভরযোগ্য, সিমপটম হয়। যেমন —-
★ অত্যন্ত গর্বিত, অহংকারী, নিজেকে সব সময় বড় এবং উঁচু মনে করে এবং অন্য সবাইকে ছোট বা নীচ মনে করে—–প্লাটিনা,
★ খুবই নম্র, ভদ্র, শান্ত, রোগের কথা বলতে বলতেই কাঁদতে থাকে—পালসেটিলা,
★ খুবই দয়া মায়া বোধ, মানসিক উদ্বেগ অত্যন্ত বেশী—-কস্টিকাম,
★ খুব রাগ, সহজেই কান্না পায়, সান্তনা দিলে বা বুঝালে– সব রাগ- অভিমান আরও বাড়ে—- নেট্রাম মিউর,
★ ব্যর্থ প্রেম, বা ভালবাসার অপমৃত্যুর পরে ঘরের কোণে একা চুপচাপ বসে থাকে, কাউকে কোন অভিযোগ করে না, অনুযোগ করে না , শুধু ঘনঘন দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে আর নীরবে কাঁদে —ইগ্নেশিয়া,
★ ক্রমাগত আত্মহত্যা করতে চাইছে, অর্থাৎ- মনে প্রবল ভাবে আত্মহত্যার ইচ্ছা বা প্রবৃত্তি জেগেছে, 3-4 বার চেষ্টা করা হয়ে গেছে, তার জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্যই আত্মহত্যা করা , কারন– পৃথিবীটা আর ভাল লাগছে না—- অরাম মেট,
★ সব সময় ঝগড়া করার প্রবণতা — কোমর বেঁধে ঝগড়া করে , কেন্ট বলেছেন—- They purchase quarrels —-, মানে গা বাধিয়ে ঝগড়া করা অার কি, অসম্ভব রাগ, অভদ্র ব্যবহার, অমার্জিত, অসামাজিক কথা বার্তা, সহ্যশক্তির অত্যন্ত অভাব—- ক্যামোমিলা,
★ অত্যন্ত সন্দেহ, সবাইকে সন্দেহ করছে, সবসময় নগ্ন থাকতে চাইছে, অশ্লীল কথাবার্তা বলছে , মনে খুব হিংসা, ছেলে মেয়ে পুত্রবধূ সবার সামনে অশ্লীলতা প্রকাশ পাচ্ছে, পুত্রবধূর সাথে সবার সামনেই অশ্লীল ব্যবহার করতে চাইছে , কথাবার্তার মধ্যে সব সময় নোংরা এবং অশ্লীলতা—- হায়োসিয়ামাস,
★ অত্যন্ত রাগ, অত্যন্ত ক্ষিপ্রতা ও হঠকারিতা, এত রাগ ও ক্রুদ্ধতা— মা বাচ্চাকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারে, ঘরে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে, নাপিত ক্ষুর দিয়ে খরিদ্দারের গলা কেটে দিতে পারে — হিপার, ইত্যাদি ।
এইরকম একটি বা দুইটি স্ট্রং মানসিক লক্ষনের উপরে নিশ্চয় আমরা প্রেস্ক্রিপশন করতে পারি।
কিন্তু সব কেসেই কি আমরা এইরকম স্ট্রং মানসিক লক্ষন পাই ? পাই না।
তাহলে সব কেসে কেমন করে আমরা আবোল তাবোল ছোটখাটো মানসিক লক্ষনের উপরে প্রেসক্রিপশন করবো? এটাই আমাদের বক্তব্য, এটাই আমাদের প্রশ্ন। বিশেষ করে উনারা ডিলুশন নিয়ে বেশী মিথ্যা মাতামাতি করে চলেছেন ।
আমাদের দ্বিতীয় বক্তব্য হচ্ছে — এরা একটা নিজস্ব রেপার্টরী বানিয়েছে, যেখানে বিভিন্ন রুব্রিকস দিচ্ছেন এবং তার ওষুধ দিচ্ছেন। আমি দেখলাম — সেগুলি সব নতুন কায়দার, নতুন আঙ্গিকে, নতুন উপাদান নিয়ে, নতুন সব ঔষধে ভরা। যে কেউ বই লিখতেই পারে , কিন্তু সোর্সগুলি তারা কোথা থেকে পেল ? আমরা কি জানতে চাইতে পারি না?
একটা ছোটখাটো বাজে সিমপটমের উপরে দেখছি– আটটা, দশটা বা বারোটা ওষুধ দেওয়া অাছে। কিন্তু তা দিয়ে কি একটা রোগীকে চিকিৎসা করা যায়? কোথায় পাচ্ছে তারা এই সব মন গড়া ঔষধগুলি?
আমি দেখছিলাম আমাদের এক চিকিৎসক বন্ধু, প্রতিদিন এমনই সব ছোটখাটো রুবরিক নিয়ে— (বেশিরভাগই ডিল্যুশনের উপরে) — আলোচনা করছেন। আমি বলতে চাই– ঐ রকম ছোটখাটো বাজে ডিলুশন সিমপটমসের উপরে প্রেসক্রিপশন করা যায় না, এবং রোগও সারে না, এবং এসব আলোচনা করাও বৃথা, মানুষের সুস্থ মগজকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিব্রত করা।
যেন ব্যাপারটা হচ্ছে এইরকম–
একটি লোক আপনার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে 30 কেজি ওজনের একটা প্যাকেট আপনাকে ধরে মাথায় তুলে দিতে বলছে । বাড়িতে শক্ত-সমর্থ কুড়ি বাইশ বছরের যুবক ছেলে আছে , কিন্তু তাদের না বলে, বা তাদের না পাঠিয়ে, আপনি আপনার ৪ বছরের বাচ্চাকে পাঠাচ্ছেন ঐ কাজে। সে কি পারবে বোঝাটা ঐ লোকটির মাথায় তুলে দিতে?
ঠিক সেইরকম, এতদিনকার শতাব্দী পরীক্ষিত ল্যাকেসিসের স্ট্রং সিমটমস গুলি—–
যেমন— * বাম দিকে বৃদ্ধি, * ঘুমের মধ্যে বা ঘুমের পরে বৃদ্ধি, * টাইট করে ড্রেস পরতে পারে না, বিশেষ করে গলার কাছে অসহ্য, * ডিসচার্জ বা নির্গমনে আরাম,* গরম অত্যন্ত বেশী,
—– এই সব ল্যাকেসিসের মূল কথা না শিখিয়ে–বস্তাপচা কোথাকার সস্তা, কোথাও নেই, —- এমন সব মনগড়া ভুল-ভাল অপ্রয়োজনীয় ডিলুশন সিমপটম ল্যাকেসিসের ঘাড়ে চাপিয়ে আপনারা রুবরিক বানিয়ে, ল্যাকেসিস শেখাচ্ছেন?
মানে, আগের দেওয়া উদাহরনের —জোয়ান ছেলেকে মালটা ধরতে না দিয়ে ছোট বাচ্চাটিকে পাঠাচ্ছেন ।
মানে, শেখাতে চাইছেন—শিখতে চাওয়া– নতুন তরতাজা ভবিষ্যতের পানে তাকানো সবুজ ভাই বোনদের, —— এক নতুন হোমিওপ্যাথি, যার গালভরা নাম দিয়েছেন—রি-ডিসকভারি অব হোমিওপ্যাথি ।
হোমিওপ্যাথির ইতিহাস, আপনাদের ক্ষমা করবে ত?
উপসংহার
বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাকে সহজ এবং দ্রুত কার্য্যকরী করার জন্য সেই 1830 সাল, অর্থাৎ বোনিংহোসেন থেকে আরম্ভ করে এযাবৎকাল অনেকেই বিভিন্ন পদ্ধতি বা মেথড আবিষ্কার বা সৃষ্টি করে চলেছেন। তারই একটা নবতম সংযোজন– দিল্লীর ডাঃ সেহগাল কৃত মেন্টাল মেথডে চিকিৎসার থিওরি। অর্থাৎ —- কোন শারীরিক লক্ষণ না নিয়ে কেবলমাত্র মানসিক লক্ষণ নিয়েই চিকিৎসা করা হবে, এবং তাতেই রোগী সুস্থ হবে।
উদ্দেশ্য মহৎ নিঃসন্দেহে। কিন্তু অনেকের মতন আমারও এই নতুন থিওরিটা মানা সম্ভব হয়নি। তবে কিছু না জেনে, না পড়ে, বা না বুঝে আমি সমালোচনা করতে চাই নি। আমি ওদের বেশকিছু বইপত্র পড়েছি, এবং ইউ-টিউবের বেশকিছু ভিডিও দেখেছি। মানসিক সিমপটমসগুলি বা রুব্রিকসগুলি যেভাবে ওনারা অর্থ করছেন তা মানা মুশকিল। যেমন ডাক্তার কল্যাণ কুমার সুর একটি ভিডিওতে দেখলাম— রোগী বেশী রুটি খেতে চাইছে না—- ইন্টারপ্রিটেশন করতে বলছেন—- Delusion, poor he is —- মানে আসল অর্থ— সে অত্যন্ত গরীব বা দুঃখী , রুটি খেতে না চাওয়ার সাথে তার কেন সমপর্ক থাকবে? এইরকম অজস্র রুব্রিকসের ওনাদের সবাই বিভিন্নভাবে অর্থ করতে চেয়েছেন, যা মানা সত্যিই মুশকিল।
আমি ডাঃ কল্যাণ কুমার শূর, ডাঃ মুয়াজ্জাম হোসেন, এবং ডাঃ দেবাশীষ রানারও অনেক ভিডিও দেখেছি। সবথেকে বেশী অবাক লাগছে— কারুর সাথে কারুর ইন্টারপ্রিটেশন মেলে না। তাহলে, আপনারা যে তরুন চিকিৎসকদেরকে আহবান করছেন — তারা কার অর্থ বা কার ইন্টারপ্রিটেশন ফলো করবে?
যাই হোক — এই নবতম পদ্ধতি দেখলাম —-বিশেষ করে বাংলাদেশকে খুব ভালোভাবেই গ্রাস করছিলো। আমার মতে হ্যানিম্যানের হোমিওপ্যাথির একটা রাহুগ্রাস চলছিলো। নৈতিক দায়িত্ব মনে করে আমি সেই রাহুগ্রাস থেকে চিকিৎসকদের বের করতে চেয়েছি মাত্র। কারণ— এইভাবে সব রোগ সারানো যায় না, বা সম্ভব নয় বলে আমি বিশ্বাস করি। হ্যানিম্যান, কেন্ট, হেরিং, বোনিংহোসেন, কেউ তা বলেননি এবং করেন নি।
তাছাড়া আগেই বলেছি, রেপার্টরীর রুব্রিক গুলোর ইন্টারপ্রিটেশন বা অর্থ সব ভুল ভাবে, প্রত্যেকের নিজস্ব ইচ্ছা মতন করা হচ্ছে, এবং নিজেদেরই মধ্যে কারুর সাথে কারুরটা মিলছে না বা সামঞ্জস্য থাকছে না ।
আর একটা দামী কথা বলতে চাই—–হাতের কাছে যখন উল্লেখযোগ্য শারীরিক লক্ষণগুলি তাদের বিভিন্ন চরিত্রের— Causations বা কারণ, Modalities বা হ্রাস-বৃদ্ধি, Sensations বা অনুভূতি, ইত্যাদি নিয়ে হাজির, এবং তা যুগান্ত ধরে শত শত রোগীতে পরীক্ষিত ধ্রুব সত্য, তাহলে তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে কেবলমাত্র একটা মানসিক লক্ষণকে অনুধাবন করার জন্য, বা বোঝার জন্য, বা ঠিকমতন পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বিশ্লেষণ করার জন্য, কেন অযথা এবং অহেতুক সময় নষ্ট করবো?
প্রায় এক বছর আগে এক ভদ্রমহিলা আমাকে বলেছিলেন প্রত্যেকবার শপিং বা প্রোগ্রাম করে বাজার বা মার্কেটিং করে বাড়ীতে আসা মাত্র তার মাথা ব্যথা আরম্ভ হয়ে যায়। কেন্টের রেপার্টরীতে হেড চ্যাপ্টারে একটাই ঔষধ আছে Head, Pain, Shopping after —- Sep. এর সাথে আরও ২/১ টি সিমপটমস মিলিয়ে তাকে Sepia 200 এক ডোজ দেওয়া হয়। এক বছরের মধ্যে তার আর একদিনও বাজার করে বাড়ী ফিরে মাথার যন্ত্রনা হয় নি। কিন্তু এই এক মিনিটের মধ্যেই রেপার্টরী দেখে এই যে প্রেসক্রিপশন করাতে ভদ্রমহিলা সুস্থ হলেন , এক্ষেত্রে, মেন্টাল মেথডে চিকিৎসা করতে হলে—- সে কখন বাজারে যায়, মনের কি অসুবিধা হয়, মনের কি পরিবর্তন সে বোঝে, এইসব অনর্থক প্রশ্ন করে সময় নষ্ট করা এবং চিকিৎসার নামে একটা হাস্যকর পরিবেশ তৈরি করা নিরর্থক নয় কি? সিপিয়াতে ত রোগী সুস্থ হলো, অসুবিধা কোথায়?
প্রচুর ঘাম, ঘামে খুব গন্ধ হয়, রাতে বিছানায় গেলেই বাতের ব্যথা বাড়ে, পিপাসা বেশী, জিভ —মোটা, থলথলে, ভিজে, আর দাঁতের ছাপ —- এই লক্ষনে M S দিলে যদি বাতের ব্যথা কমে, তাহলে এই ক্ষেত্রে মানসিক লক্ষন নিয়ে কচকচানি করার আমার প্রয়োজনটাই বা কি?
যাই হোক , আমি আমার নিজস্ব ব্যক্তিগত মতবাদ ফেসবুকের মতন একটি মিডিয়াতে ভদ্র, সভ্য ও অত্যন্ত বিনীত ভাবেই প্রকাশ করেছি। কারণ, হোমিওপ্যাথি পৃথিবীর অন্য দেশের মতন একটা নতুন ট্রাডিশনের মধ্য দিয়ে চলতে গিয়ে তার মূল স্রোত থেকে সরে গিয়ে, যেন বিলীন না হয়, তার জন্য আমার বিদ্যা, বুদ্ধি, বা অনুভূতি দিয়ে তা রক্ষা করার সামান্যতম চেষ্টা করেছি মাত্র।
কিন্তু ফেসবুকের একটা অসুবিধা হলো— কেউ কিছু লিখলে বা পোস্ট করলে অনেকে তাতে যোগদান করতে পারে এবং নিজস্ব বিবিধ বা বিভিন্ন মতামত বা মন্তব্য বিভিন্নভাবে, বা ভিন্ন ভিন্ন স্টাইলের ভাষা প্রয়োগে, বিভিন্ন মাত্রায় ব্যবহার করতে পারে। যা অনেক সময় অপ্রীতিকরও হয়, যা কখনই পোস্টদাতার দোষ নয় এবং তার আয়ত্তের মধ্যেও থাকে না।
তাই এযাবৎকাল মেন্টাল মেথডের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আমার বিভিন্ন পোস্টে, অর্থাৎ মেন্টাল মেথডের চিকিৎসা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আমার পোস্টগুলিতে যারা সমালোচনা করতে গিয়ে বিরূপ বা অশোভনীয় মন্তব্য করেছেন বলে মনে হয়েছে, তাদের তরফে,
এবং, আমার অজস্র লেখনীর মধ্যে যদি আমার অজ্ঞাতসারে, বা আমার অনিচ্ছাকৃত কোন খারাপ শব্দ বা ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে বলে মনে হয়ে থাকে, এবং তার জন্য কারুর মনে যদি সামান্যতম ব্যথা বা আঘাত লেগে থাকে , বা কাউকে সামান্যতম ব্যথিতও করে থাকে, তাহলে অতি বিনম্র চিত্তে এবং বিনীতভাবে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলাম।
মেন্টাল মেথডে চিকিৎসার উপসংহার টেনে দিয়েছিলাম। কিন্তু এই মেথডে দৃড় বিশ্বাস, এমন কয়েকজন আবার আমাকে লিখতে বাধ্য করালেন।
তাই আবার আমি কিছু লিখতে চাইছি, বা আলোচনা, বা সমালোচনা করতে চাইছি। যে কোন বিষয়ে হেলদি আলোচনা বা সমালোচনা করলে তা কোনো খারাপ বা দোষের নয়। কিন্তু প্রবলেম হল যারা আমার পক্ষে থাকেন তাদের অনেকেই কিছু বিরুপ মন্তব্য করে বসেন আবার যারা আমার বিপক্ষে তারাও কিছু গালাগালি দেন, বলেন কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি হচ্ছে, ইত্যাদি। এই দুই ধরনের চিকিৎসকদের কাছে অনুরোধ নানা রকম খারাপ মন্তব্য থেকে বিরত থাকবেন।
হেলদি আলোচনা-সমালোচনা থেকে সবার অনেক কিছু শেখার থাকে, বোঝার থাকে। তাতে ব্যক্তিগত সম্পর্ক নষ্ট হওয়ারও কোনো জায়গা থাকে না। এসব শিক্ষামূলক আলোচনা /সমালোচনা ত কোন ক্রিমিনাল কাজকর্ম নয়, তাই সমপর্ক নষ্ট হওয়ারও কোন জায়গা নেই। প্রসঙ্গক্রমে একটি গল্প বলি। একবার একদিন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় কোন একটি বিষয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সাথে কংগ্রেস নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ভীষণ বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। জ্যোতি বসুর মৃত্যুর পরে যখন তার সম্বন্ধে বিভিন্ন জন বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেছিলেন, তখন সুব্রত বাবু এই ছোট্ট গল্পটি পেপারে লিখেছিলেন। ঐদিন বাকবিতণ্ডার পরে বিকালে বিধানসভা ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় জ্যোতি বাবু সুব্রতবাবু কে বলেছিলেন গাড়িতে ওঠো, পার্ক স্ট্রিটে চাইনিজ খেয়ে বাড়ী যাবো। সুব্রতবাবু বলেছিলেন দু’ঘণ্টা ধরে যা খাওয়ালেন, আবার খাওয়ানো? জ্যোতিবাবু বলেছিলেন ও ত ইন্ডিয়ান খাবার খাওয়ালাম এখন খাওয়াবো চাইনিজ খাবার। সুব্রতবাবু কে নিয়ে জ্যোতি বাবু চাইনিজ রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করেছিলেন, পরের দিন আবার যথারীতি বাকবিতন্ডাও হয়েছিলো।
তাই, যে কথা বলছিলাম, —কাগজে-কলমে বা মুখে শিক্ষিত মানুষদের কোন ভদ্র আলোচনাকে কেউ অন্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না।
মেন্টাল মেথডে যাদের ভিডিও শুনছি বা দেখছি —- তাতে মনে হয়েছে–বাংলাদেশের — ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, এবং ডাঃ দেবাশীষ রানার যথেষ্ট পান্ডিত্য আছে। আর আমাদের পঃবঙ্গের ডাঃ কল্যাণ সুরেরও যথেষ্ট পান্ডিত্য আছে।
তাই, তারা + অারও যারা এই মেথডকে খুবই সমর্থন করছেন তাদেরকে এইসব আলোচনায় ভদ্রজনোচিত ভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য আহবান জানাচ্ছি ।
আপনাদের অংশগ্রহণ করা উচিত— কারণ , আপনারা যেহেতু এই বিষয়টাকে established করতে চাইছেন, মানেন বা বিশ্বাস রাখেন। কোন বিষয়কে established করতে হলে গালাগালি বা খারাপ কথা দিয়ে তা করা যায় না, বা তার সমাধান হয় না। যুক্তিতর্ক, ভাষা , লজিক দিয়ে তা বোঝাতে হবে। যেমন হ্যানিমানকে হোমিওপ্যাথি প্রতিষ্ঠার জন্য দিনের পর দিন লিপজিগ বিশ্বিদ্যালয়ে লেকচার দিতে হয়েছিল, অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছিলো, এবং সবার সেই সব নানা রকম প্রশ্নের সলভ তাকে করতে হয়েছিলো।
তাই, যে কথা বলছিলাম —মেন্টাল মেথডে মধ্যে যাদের ভিডিও শুনেছি—- তাদের মধ্যে সেগলরা ছাড়া বাংলাদেশের ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং ডাক্তার দেবাশীষ রানা, এবং আমাদের পশ্চিমবঙ্গের কল্যান কুমার সুর, এই তিনজনেই বিশেষ জ্ঞানী মানুষ বলে আমার মনে হয়েছে। তাদের বিভিন্ন বক্তব্যের আমি সমালোচনা করতে চাইছি। আমি ভিডিওগুলির রেফারেন্স দিয়ে দেবো। যুক্তি তর্ক দিয়ে বোঝান যে এটা কেন হবে, বা হবে না?
আজ ডাক্তার কল্যাণ কুমার সুরের একটি ভিডিও থেকে আলোচনা করতে চাইছি। আমার উল্লেখ করা ভিডিও গুলি কেউ দেখতে চাইলে ইউ টিউবে গিয়ে সার্চ করবেন। তবে একজনের নামে অনেক ভিডিও থাকায় চট করে যাতে বুঝতে পারেন কোনটা, সেইজন্য, ভিডিওটির সময় উল্লেখ করে দিচ্ছি। প্রত্যেক ভিডিও বেরুলে সময় দেখা যায, ঐ সময় দেখেই ধরতে পারা যাবে কোন ভিডিও টি।
কল্যাণবাবুর যে ভিডিওটির এখন অালোচনা করতে চাইছি, তার সময় দেখবেন—-1 ঘন্টা 15 মিনিটের।
এই ভিডিওটিতে কল্যান বাবু উদাহরণ সহকারে কয়েকটি রুব্রিক বিশ্লেষণ করেছেন।
প্রসঙ্গক্রমে বলি—- ভিডিওগুলি দেখে এবং শুনে বুঝেছি —- কল্যাণবাবু একজন খুব উঁচুদরের বক্তা । তাঁর বলার বা লেকচার দেওয়ার টেকনিক অসাধারণ। আমার মতে, তিনি একজন জাত টিচার বা লেকচারার। অভূতপূর্ব তার বাচনভঙ্গী এবং বোঝানোর স্টাইল। আজকের দিনে আমাদের হোমিওপ্যাথিক কলেজগুলিতে যে সব টিচার ঢুকছে, সেখানে কল্যাণবাবুর মতন একজন টিচার থাকলে ছাত্রদের যথেষ্ট উপকারই হতো। আমার মনে হয় যে কোন বিষয়ে উনি লেকচার দিলে তা অতি সহজেই ছাত্ররা বুঝতে পারবে এবং উপকৃত হবে। কারন, অতি সহজ, সরল, এবং প্রাঞ্জল ভাষায় উদাহরণ সহকারে উনি বুঝিয়ে হৃদয়ঙ্গম করাতে পারেন। ওনার সব ভিডিওগুলিতেই সবকিছু অপূর্ব সুন্দর ভাবে বোঝানো।
কিন্তু পার্থক্য বা আমার/ অামাদের আপত্তি ত অন্য জায়গায়। রুবরিকের মানে করায়—- আমার বা আমাদের মতে বহু ইন্টারপ্রিটেশন উনি বা উনারা দিচছেন—ভুল, মানা যায় না।
কিছু পয়েন্ট আউট করছি—
এই ভিডিওটিতে—-
প্রথম কেস—- রোগীর খুব কোমরে ব্যথা, তার ছেলে তাকে খুব অবহেলা করে, কিন্তু সে সত্যিই ব্যথায় খুব কষ্ট পাচ্ছে।
উনি রুব্রিক নিতে চান–
*Lamenting —- মানতে পারলাম না। Lamenting মানে হল যে ক্রমাগত এটা ওটা নিয়ে ঘ্যানর ঘ্যানর করতে থাকে, কতকটা ন্যাগিং টাইপের, অর্থাৎ—– constant complaining, bemoaning, wailing, grumbling, howling, moaning, বা কোন কিছুতেই সন্তুষ্ট হয় না— discontented , etc.
কিনতু এখানে একজন রোগী স্বাভাবিক ভাবে তার কোমরে ব্যথা চিকিৎসককে জানাচছে। Lamenting নেব কেন? সে ত রোজ রোজ এসে নানান ব্যাপার নিয়ে ঘ্যানর ঘ্যানর করছে না।
তার ছেলে তাকে ঠিকমতন দেখে না —- তাই সে ছেলের কিনে দেওযা কোমরের অর্থোপেডিক বেল্টটাও ব্যবহার করে না।
—– কল্যাণবাবু correctly বুঝিয়েছেন, এটা ঘৃণামিশ্রিত রাগ—- indignation
কিনতু আমরা সারা জীবন মেটিরিয়া, রেপার্টরীতে দেখছি, ব্যবহার করছি, মেইন মেডিসিনস—- Colo, Stap——— উনি বলছেন, মেডিসিন—- Nux Vom, —- নিজের clinical observative medicine বললে অবশ্য কিছু বলার নেই।
এই সিমপটমসে উনি দ্বিতীয় রুবরিকস নিতে বলেছেন—- Complaints, pain, intolerance from—– একজন রোগী, তার কোমরে ব্যথা হচ্ছে, ডাক্তারকে বলছে—-এটা ত একটা কমন সিমপটম।
অসহ্য কোমরে ব্যথার চিকিৎসার জন্য মানসিক লক্ষন কি কি নিতে হবে, শেখানো হলো, কিন্তু —-
প্যাথলজিক্যাল প্রবলেম কিছু অাছে কি না তা কি ভাবে দেখতে হবে, শেখানো হলো না, বুঝানো হলো না।
রোগীর এত মারাত্মক ব্যথার জন্য kidney stone, বা referred pancreatic ca র pain, বা স্লিপ ডিস্ক, কি না, তা দেখতে বা investigate করতে বলা বা শেখানো হলো না।
কোন বড় ধরনের organic pathology থাকলে তা যেমন দেখার + আরোগ্য হবে কি না, বা সার্জারীর প্রয়োজন কি না, তা শেখানোর চেষ্টা হলো না।
অসংখ্য incurable কেস পরে এ্যালোপ্যাথিক হসপিটালে যায়, আর হোমিওপ্যাথির গালমন্দ হয়।
পরের রুবরিক Religious বুঝাতে গিয়ে উনি মানে ঠিকই বলছেন —- কোন বিষয়ের প্রতি অতিরিক্ত বিশ্বাস বা ভক্তি, ঠিকই। কিন্তু উদাহরণ দিলেন—- যেমন একজন কিছুতেই এ্যালোপ্যাথিক ঔষধ খাবে না , মরে গেলেও এ্যালোপ্যাথিক হাসপাতালে যেতে চায় না। একজন শিক্ষিত মানুষ যদি এ্যালোপ্যাথিক ঔষধের ভয়াবহ সাইডএফেক্টস দেখে বা জেনে না খেতে চায়— তাহলে Religious rubric নেব কেন?
আলোচনা চলুক—- কেউ স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বোঝাতে চাইলে বোঝান।
তাই বারবার বলছি, যারা সেহগালের থিওরী মানেন বা করেন, তারা ঐ মেথডে বহু কেস সারছে বা সারাতে পারছেন, তার অথেনটিসিটি দেখান। তাহলে মেথডটি সম্মন্ধে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিঃসন্দেহে বাড়বে।
কারন—- আমাদের মনে প্রশ্ন—বহু ক্ষেত্রে মানসিক লক্ষন দিয়ে চিকিৎসা হয় না, যেমন—
★ কাটা জায়গা শুকাতে— ক্যালেন্ডুলা,
★পোড়া জায়গা শুকাতে —-ক্যান্থারিস,
★পেটব্যথা— থেকে থেকে হচ্ছে ,এবং ভীষন জোরে জোরে চাপলে কমছে— কলোসিন্থ,
★ একটি ছোট ফোঁড়া রাতারাতি সেপটিক অবস্থায় দাঁড়ালে —- এচিনেসিয়া,
★ ১০০ ডিগ্রী ফারেনহাইটে ১৬০ পালস— পাইরোজেন,
★ এ্যাকিউট কনজাইভেটিসে চোখ দিয়ে সমানে জল পড়ছে—- ইউফ্রেসিয়া,
★ ওভারইটিং বা বেশী ভূরীভোজন খেয়ে পেটের গোলমাল, জিভে যেন দুধের সরের মতন প্রলেপ—- এ্যান্টিম ক্রুড,
★ বুকে খুব ঘড়ঘড় শব্দ, মোটেই কফ উঠছে না, সারা মুখে ঠান্ডা ঘাম দেখা যাচ্ছে —- এ্যান্টিম টার্ট,
★ চোখ মুখ ফুলে গেছে, ভিতরে কাঁটা ফোটার মতন ব্যথা, জ্বালা, ঠান্ডা প্রলেপে আরাম, প্রস্রাব কম, পিপাসা নেই—- এপিস মেল,
★ হঠাৎ ১০৫ ডিগ্রী জ্বর, চোখমুখ লাল থমথমে, মাথা দপদপ করছে —- বেলেডোনা,
★ চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে অাছে, জলপিপাসা নেই অথচ বারবার প্রস্রাব করতে যাচ্ছে, জিভ বের করলে দেখা যাচ্ছে কাঁপছে—- জেলসিমিয়াম,
★ পায়ের বুড়ো আঙুলের জয়েন্টে ব্যথা, দূর্গনধ প্রস্রাব—- বেঞ্জয়িক এ্যাসিড,
★ গেঁটে বাত, ব্যথা খুব ঠান্ডা জলে কমছে, শীতকাতুরে রোগী —- লিডাম প্যাল,
★ গতকাল হোটেলে খেয়েছিলো, আজ আমাশা হয়েছে , বারবার পায়খানা করতে দৌড়াচ্ছে, কিন্তু পায়খানা বেশী হচ্ছে না , শরীরে শীত ভাব, —- নাকস ভম,——- ইত্যাদি।
——-বিশ্বাস? কি যেন বিশ্বাস নামের কোন এক পন্ডিট প্রবর লিখেছিলেন—- তার খুব নলেজ, তাই আমার মতন অল্প বিদ্যা ভয়ংকরীর লেখা দেখলেই তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত না কি জ্বলে উঠে,—- তা সেই বিশ্বাসবাবু— আপনাকে বলছি, এই লেখার বিরুদ্ধে কিছু লিখুন। যদি যুক্তি দিয়ে লেখার ক্ষমতা থাকে। আছে কি? যদি না থাকে তাহলে আপনিই ত অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী প্রমাণ হবে সবার কাছে।